আধুনিক কৃষি বাতায়ন

 

আধুনিক কৃষি বাতায়ন

কৃষি হচ্ছে পৃথিবীর প্রাচীন পেশা এবং সভ্যতার সুচনা। ‍মানুষের জন্য,পশুর জন্য খাদ্য উৎপাদন, ফসল চাষ, পশু পালন প্রাকৃতিক  সম্পদের ব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়াকে বুঝায় । এটি মুলত ভুমি ব্যবহার করে চাষাবাদ করা হয়। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষাবাদ করে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পন্ন করে  এবং কৃষিতে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।





আমরা জানি মাটিতে চাষাবাদ করা হয়, চাষাবাসের জন্য  মাটি হচ্ছে মুল উপাদান, 


কৃষির উপাদান সমুহঃ


* ফসল চাষঃ ধান, গম, ভূট্টা, আলু, পিয়াজ , রশুন, শাক-শবজি ও ফলমুল উৎপাদন।

* বৃক্ষরোপন ঃ নানা রকম গাছ লাগানো ও পরিচর্চা করা

* প্রাণী পালন ঃ হাস-মুরগি, গরু-ছাগল ইত্যাদি পালন

* মৎস্য চাষ ঃ দীঘিনালা বিভিন্ন রকম জলাশয়ে মাস চাষ করা

* ছাদ বাগান ( কৃষি ) ঃ বাড়ীর ছাদে কৃষি বাগান করা

ফসল চাষ , বৃক্ষরোপন , প্রাণী পালন ,মৎস্য চাষের আধুনিকায়নের মাধ্যমে আমরা এদেশের বিশাল জনসংখ্যার খাদ্য ঘাটতি পুরন করতে পারি।


আধুনিক চাষাবাদ কি?

অধিক উৎপাদনশীলতার জন্য কৃষিতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার , উন্নত প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে অল্প জমিতে অল্প পরিশ্রম করে অধিক উৎপাদন নিশ্চিত করা ।

উন্নত প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি  ঃ

* ড্রোনের মাধ্যমে জমির পরিমাপ ও জমির মনিটরিং

*  স্যাটেলাইট মানচিত্রের মাধ্যমে জমির মনিটরিং

*  মোবাইল  অ্যাপের মাধ্যমে জমির মনিটরিং

* ট্র্যাক্টর ,পাওয়ার টিলার ,কম্বাইন হারভেস্টার এসব আধুনিক যন্ত্রপাতি চাষের জন্য ব্যবহার করা। 

* আধুনিক  স্পিস্কলার সেচ, ড্রিপ সেচ পদ্ধতি ব্যবহার করা

* সঠিক পদ্ধতিতে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা

* উৎপাদিত কৃষি পন্য বাজারে নেওয়ার জন্য ই-কমার্স প্লাটফর্ম ব্যবহার করা


আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ  ঃ


আধুনিক কৃষি উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষিত জনবল  ও কৃষক দরকার। সরকার কৃষিকে আধুনিকায়ন করার জন্য সঠিক পরিকল্পনা বা রোডম্যাপ ও প্রশিক্ষনের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে।

* ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে  থানায়,জেলায় প্রশিক্ষিত জনবল ও কৃষক তৈরী করার নিয়মিত প্রশিক্ষন দিতে হবে 

* অল্প খরচে বা সহজ শর্তে কৃষকদের ঋনের ব্যবস্থা করতে হবে 

* উন্নত বীজ ও সারের ব্যবস্থা করতে হবে।

* উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ উৎপানের ব্যবস্থা করতে হবে

* ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবস্থা করত হবে

* প্রযুক্তির  সহজলভ্যতা সুনিশ্চিত করতে হবে



সরকার ডিজিটাল কৃষি সেবা চালু করেছে । কৃষকদের সহজে কৃষি বিষয়ক তথ্য দেওয়ার জন্যে এই
সেবা চালু করা হয়েছে।এটি ওয়েবসাইট বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ ( কৃষক বন্ধু অ্যাপ,সিএইচসিপি অ্যাপ )  ও কল সেন্টারের মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকে। ই-কৃষি উদ্যেগ  সরকারের একটি প্রকল্প, যা  অনলাইনে কৃষি উপকরন কেনা-বেচা ও কৃষি বিষয়ে জ্ঞান আদান -প্রদানের সুযোগ করে দেয়। এগ্রো-ভিত্তিক অ্যাপ যেমন KRISHI BAZZAR, SHUROKKHA, iFARMAR.... প্রযুক্তি ও তথ্যের মাধ্যমে কৃষি খাতে উদ্ভাবন আনার গুরুত্বপুর্ন পদক্ষেপ।  


* স্মার্ট সেন্সর - মাটি  ও পানির গুনাগুন পরিক্ষা


* ড্রোন- জমির মানচিত্র তৈরিতে ভুমিকা পালন করে


* এ আই ভিত্তিক পুর্বাভাস- আবহাওয়া ও শস্যরোগ নির্ধারন


* ডিজিটাল অর্থায়ন সেবা- নগদ , রকেট , বিকাশের মতো কারেন্সি কৃষকদের সহজে লেনদেন ও ঋণ প্রাপ্তিতে সহজ করেছে।

 যুব- তরুনদের আধুনিক কৃষি উন্নয়নে সম্পৃক্ত করতে হবে, ডিজিটাল ডিভাইজ পরিচালনা, ডিজিটাল প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ চালানোর জন্য সমাজ ও দেশ উন্নয়নের জন্য, বিশাল  এ জনসংখ্যার খাদ্য উৎপাদনের জন্য সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।


পরিশেষে বলা যায়, পৃথিবীর বহু দেশ আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার প্রয়োগ ঘটিয়ে সাফল্য অর্জন করেছে। বর্তমান ডিজিটালাইজেশনের যুগে বাংলাদেশ কৃষি সেক্টরে উন্নতির চরম শিখরে পৌছাতে হলে অবশ্যয় কৃষির প্রতি যত্নবান হতে হবে তবেই কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে ।



 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url