মানসিক স্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতা


মানসিক স্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতা

 মনের স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । বিজ্ঞানের ভাষায় ইংরেজিতে  DEPRATION শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে বিষন্নতা। মনে রাখতে হবে চিন্তা মানেই দুুশ্চিন্তা নয় আবার মন খারাপ হলেই তা বিষন্নতা নয় । মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য কিছু উপায় মেনে চলা উচিৎ। কাজের চাপ, অর্থনৈতিক কারণ, পারিবারিক বিষয়াদী,ও অসুস্থতার কারণে মনে চাপ ও বিষন্নতা আসতে পারে। 




 




* বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যা ( WHO)  এর মতে সামাজিক স্তরে মানসিক স্বাস্থ্য সংরক্ষণ  ও পুনরুদ্ধার করা গুরুত্বপূর্ণ।। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় গবেষনা করে জানায়, যাদের হৃদ রোগের পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে তাদের মধ্যে যারা ইতিবাচক চিন্তা চেতনার মধ্যে ছিল ২৫ বছরের ভিতরে এক তৃতীয়াংশ হৃদরোগ কমছিল। 


*  গবেষনায় দেখা গেছে যারা আশাবাদী , ইতিবাচক চিন্তা ও কাজের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করে ,তাদের স্বাস্থ্য সমস্যা কম ও তারা দীর্ঘায়ু হয়। 

* মানসিক স্বাস্থ্যের লক্ষনঃ

  • কোন কাজে মনোযোগ দেয়া হ্রাস পাওয়া
  • দৈনন্দিন কাজ কর্ম থেকে বিরত থাকা
  • খাওয়া দাওয়ার প্রতি অবহেলা 
  •  ঘুমের অভ্যাসের পরিবর্তন ঘুম কম হওয়া
  • দুঃখ অনুভব কর
  • নিজেকে ছোট ভাবা হীনমন্নতায় ভোগা
  • মেজাজ খিটখিটে হওয়া মেজাজের পরির্তন
  • একাকি থাকা অহায়ত্ত্ববোধ করা
  • আত্ত্বঘাতী চিন্তা চেতনা
         পরিবেশগত কারন,ক্ষুদামন্দা,উদ্দেগ জনিত ব্যধি, ডাইবেটিকস, হৃদরোগ ইত্যাদির কারনেও                 মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে।



        মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার ‍উপায়ঃ



  • কাজের ব্যস্ততার মাঝেও দুরে কোথাও ঘুরে আসুন
  • মাঝে মাঝে পরিবার নিয়ে কাছাকাছি ঘুরতে যান
  • বন্ধুদের নিয়ে আড্ডায় মেতে উঠুন
  • পরিবার আত্ত্বীয়-স্বজনদের সাথে আনন্দময় সময় কাটানোর চেস্টা করুন
  • কাজের মাঝেও বিরতি নিবার চেস্টা করুন
  • ব্যায়াম করুন শরীরে রোদ লাগান
  • সারাদিনের মধ্যে কিছুটা সময় নিজের জন্য রাখুন
  • মানুষকে উপকার করুন বা সাহায্য করুন
  • ইতিবাচক মনোভাব পোষন করুন
  • মেডিটেশন করতে পারেন
  • নিজ ধর্ম মতের অনুশাসন মেনে চলার চর্চা করুন
  • ৭/৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেস্টা করুন
  • নতুন কোন কিছু শেখার চেস্টা করুন
  • অতীত ও ভবিষ্যত নিয়ে টেনশন করবেন না বর্তমান কাজে সময় দিন
  • কিছুটা সময় মোবাইল কম্পিউটার ইত্যািদি  ডিভাইজ থেকে দুরে থাকুন
        


        ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার উপায়ঃ

    * ইসলাম  ধর্ম সব সময় শান্তির কথা বলে


  • ইসলামী শিক্ষা মানুষের মানসিক ও আধ্যাতিক সুস্থতার জন্য গুরুত্বপুর্ন  অধ্যায়,
  • যে আল্লাহর উপর ভরসা রাখে , আল্লাহ তার জন্য যতেষ্ট ( সুরা আত তালাক )
  • নিশ্চয় আল্লাহ ধৈয্যশীলদের সাথে আাছেন ( সুরা আল বাকারা )
  • কারো  প্রতি সহানুভুতিশীল হওয়া ক্ষমা করা মানসিক শান্তি আনে
  • যে ব্যক্তি ক্ষমা করে , আল্লাহ তাকে উচ্চ সম্মান দান করেন ( সহিহ মুসলিম )


  •    হিন্দু ধর্ম মতে- মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য সৎ কর্ম  ধর্মীয়, চর্চা ও ধ্যান এসব মানসিক শান্তি আনে
  • কঠিন মুহুর্তে স্থিতিস্থিল থাকা, আধ্যাতিক চর্চা যোগ -ব্যায়াম ভিবিন্ন শ্বাস- প্রশ্বাসের ব্যায়াম অস্থিরতা কমিয়ে মানুষিক শান্তি দান করে।
        

  •   খ্রিস্ট ‍ধর্ম মতে-  কোন বিষয়ে চিন্তিত হবে না, বরং প্রত্যেক ক্ষেত্রে প্রার্থণা ও অনুরোধের মাধ্যমে  ঈশ্বরকে জানানোর জন্য ধন্যবাদ দিন এবং ঈশ্বরের শান্তি তোমাদের হৃদয় ও মনকে যিশু খ্রিস্ট রক্ষা করবে। ( ফিলিপিয় ৪ঃ৬-৭ 
  • যিরমিয় - ২৯ঃ১১ এ বলা হয়েছে- ঈশ্বরের পরিকল্পনা সব সময় কল্যাণকর। প্রতিকুল পরিবেশে ঈশ্বরের উপর আস্থা রাখলে মানুসিক চাপ কমিয়ে আনে
       


  •  বৌদ্ধ ধর্ম মতে ঃ নৈতিকভাবে সঠিক কর্ম করা , সঠিক জীবন যাপন করা, বাস্তবতা সমন্ধে সঠিক ধারনা রাখা, 
  • মিথ্যা বা আঘাত মুলক আচারন পরিহার  করা এতে মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকে।
  • গৌতম বৌদ্ধ বলেন- আত্মনিয়ন্ত্রন ও মনোসংযম মানসিক শান্তি আনতে সাহায্য করে।


অতিরিক্ত মানসিক সমস্যা হলে বুক ধরফর করা,  গলা শুকিয়ে যাওয়া, দমবন্ধ হওয়ার অনুভুতি হতে পারে। এতে স্বস্তিদায়ক শ্বাসের ব্যায়াম বেশ কায্যকর,  ধীরে ধীরে শ্বাস ছারার মাধ্যমে এ ব্যায়াম করা যায়। ছয়  মাসের বেশি এ লক্ষন থাকলে কাউন্সেলিং রিল্যোকেশন থেরাপি ও ওষধের মাধ্যমে চিকিৎসা করানো যায়।


পরিশেষে বলা যায় , ইতিবাচক চিন্তার মাধ্যমে মানসিক চাপের বিষন্নতা কাটিয়ে সুন্দর জীবনে ফিরে আসা সম্ভব, নেতিবাচক আবেগ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়।সামাজিক সুকাঠামো গঠনের জন্য, নিজের ভিতরে মানবিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে। কারণ গবেষকেরা বলেন- ইতিবাচক আশাহত মানুষ পৃথিবীতে বেশিদিন বাচে।






        

        


Next Post
No Comment
Add Comment
comment url