অনলাইন বা ডিজিটাল বিজনেস গাইডলাইন ( Online Business/ Disital Business )



 


অনলাইন বা ডিজিটাল বিজনেস গাইডলাইন-

আপনি নিজের আর্থিক মুক্তির জন্য, পরিবারের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য ,একটা ব্যবসা করার চিন্তাভাবনা

করছেন তাই নয় কি ? মানুষ যখন জীবনের স্বচ্ছলতার জন্য একটা পন্থা খুঁজতে থাকে বিশেষ করে পড়াশোনা

করে যারা চিন্তা করে অনলাইনে কিছু একটা করা যায় কিনা, হ্যাঁ অনলাইনে একটা প্লাটফর্ম যেখানে নিজের

মেধা পরিশ্রম এবং কিছু অর্থ ইনভেস্ট করে ব্যবসা করা যায়। মনে রাখতে হবে কঠোর পরিশ্রম, সাহসী মনোবল

,ধৈর্য ছাড়া কোন কিছুর সফলতা বা অর্জন আসে না আপনি ব্যবসা করবেন ভালো কথা আপনাকে প্রথমে চিন্তা

করতে হবে ধৈয্য সহকারে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন কিনা ।


Online Business/ Disital Business




* শুরু করা


ব্যবসা শুরু করা, ব্যবসা যে কেউ শুরু করতে পারে যেমন যে কেউ একটা দোকান দিয়ে কিছু জিনিসপত্র

দোকানে সাজিয়ে ব্যবসা শুরু করে দিল । তিন, চার মাস পরে দেখা গেল দোকানের অবস্থা আগের মত নেই

দোকানের অবস্থা ভাল না। গ্রাহক নাই. বিক্রি হচ্ছে না। ব্যবসাতে মনোযোগ নাই । বাংলাদেশের এক

জরিপে দেখা গেছে, ডিজিটাল ব্যবসা শুরু করার পরে ৬০% মানুষ ব্যবসা ক্লোজ করে দিয়েছে। পূর্বেই বলেছি

ব্যবসা যে কেউ শুরু করতে পারে কিন্তু ধরে রাখা কঠিন। কিছু গাইড লাইন ফলো করলে অনলাইন বা ডিজিটাল

ব্যবসায় সফল হওয়া যাবে ।

* সঠিক পরিকল্পনা -


আমরা যারা অনলাইনে ব্যবসা শুরু করতে আসছি তারা অবশ্যই পড়াশোনা জানা মানুষ, অনলাইন বিজনেস

সম্পর্কে পড়াশোনা করে ঘাটাঘাটি করে একটা রোড ম্যাপ দাঁড় করাতে হবে, যেমন আমি কি নিয়ে, কোন পণ্য

নিয়ে ব্যবসা শুরু করব আমি কোন বিষয়টা ভালো জানি ,আমার পণ্যটি কোথা হতে সংগ্রহ করবো ,ডেলিভারি

কেমনে দিব, এসব নিয়ে র্ঘটাঘাটি করতে হবে।

* পন্য সিলেকশনঃ ২ ধরনের পন্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন ঃ


( ক)ফিজিক্যাল পন্য - যে পণ্য আমরা ফিজিক্যালী পায় স্পর্শ করে দেখতে পারি।

(খ) ডিজিটাল পন্য ঃ অনলাইন কোর্স, ইবুক ইত্যাদি।


* বাজার মনিটরিং


পন্য সিলেকশন হওয়ার পরে সিলেকশন কৃত পণ্যটি কোথা হতে সংগ্রহ করবো, কিভাবে সংগ্রহ করবো, পণ্যটির

বাজারে চাহিদা কেমন, পন্যের মান কেমন, তার যথার্থ ধারণার জন্য বাজার মনিটরিং করতে হবে।

* পন্য ক্রয় ও সংগ্রহ

যেহেতু ব্যবসা শুরু করার প্রাথমিক স্তর বা ভিগিনার অবস্থায় আছেন । এজন্য বেশি পণ্য ক্রয় করা যাবে না

গুদাম করা যাবে না, যারা পণ্যটি উৎপাদন বা বিপনন করে তাদের নিকট হতে কিছু পণ্য কিনুন এবং বিক্রি

করার পরে তাদেরকে বুঝিয়ে বলুন আপনি আমাকে পাঁচটি পণ্য দিবেন বিক্রি করার পরে আপনার কাছে পাঁচটি

পণ্যের দাম দিয়ে আটটি পণ্য নিয়ে যাব। তাদের সাথে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করুন । মনে রাখবেন সেলস

করা পৃথিবীর সবচাইতে কঠিন কাজের একটা আপনি তাদের বুঝিয়ে বলেন তারা অবশ্যই বিশ্বাস করবে। আপনি

যদি উৎপাদন ও বিপণন প্রতিষ্ঠানের নিকট আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারেন । তাহলে আপনার জন্য পণ্য

সংগ্রহ করার অভাব হবে না। আপনার ব্যবসার মাধ্যমে তারাও উপার্জন করছে এটাও মনে রাখবেন।


* আস্থা ও বিশ্বাস


উৎপাদন ও বিপনন প্রতিষ্ঠানের নিকট আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা যেমন জরুরী ।একই ভাবে গুণগত মানের

পণ্য ক্রেতার নিকট বিক্রি করে ,সুন্দরভাবে সার্ভিস ডেলিভারি দিয়ে ক্রেতার আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করার চেষ্টা

করতে হবে এবং ক্রেতার মতামত নেওয়ার চেস্টা করবেন, গ্রাহকের ফিডবেক ব্যবসার আয়না স্বরুপ

এখন আমরা আলোচনা করব ডিজিটাল মাধ্যমে কিভাবে পণ্য বিক্রি করা যায়........

* কম্পিউটার ,মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ

অনলাইন বা ডিজিটাল বিজনেস শুরু করার জন্য, ডিজিটাল ডিভাইস (কম্পিউটার বা মোবাইল) থাকতে হবে

কেননা পণ্যের ছবি কম্পিউটার বা মোবাইলে পোস্ট করতে হবে ।

পন্যের ছবি ক্রেতার নিকট পৌছাতে ইন্টারনেট সাহায্য করবে ,এজন্য নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক দরকার

* ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়া


অনলাইনে বিজনেস করার জন্য আপনাকে ফেসবুক এবং ওয়েবসাইট সম্পর্কে কিছুটা জানা থাকতে হবে

ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমানে বাংলাদেশের মোটামুটি ৫০% মানুষ

ব্যবহার করে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হতে একটি পেজ খুলবেন। উক্ত পেজের মধ্যে আপনার পন্যের ছবি

পোস্ট করবেন। ফেসবুক গ্রুপ ক্রিয়েট করে গ্রুপের মধ্যে আপনি আপনার প্রডাক্ট এর ছবি পোস্ট করবেন

এবং যারা আপনার পন্য রিলেটেড গ্রুপ খুলছে তাদের সাথে জয়েন হয়ে কমিউনিটি তৈরী করবেন।

* ওয়েবসাইট তৈরি


যেহেতু আপনি ব্যবসা শুরু করেছেন প্রাথমিক পর্যায়ে ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ ক্রিয়েট করার

পরে । দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে ব্যবসার জন্য একটা ওয়েবসাইট তৈরি করা। বর্তমানে ওয়েবসাইট স্বল্প খরচে তৈরি

করা যায়, আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করে ওয়েবসাইটে পন্যের ছবি, লেখা ও ভিডিও আপলোড করবেন, আপনি

একজন উদ্যেক্তা বা সফল ব্যবসায়ী হতে চান। তাহলে আপনাকে অবশ্যই একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।

ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পন্য বিক্রি বাড়বে ও ক্রেতার আস্থা- বিশ্বাস অর্জনে বিরাট ভুমিকা পালন করবে।

* লিখিত কনটেন্ট


পণ্যের গুণগত বিষয় লিখিত আকারে বিস্তারিত তুলে ধরতে হবে, যাতে করে একজন

ক্রেতা বুঝতে পারে যে পন্যটি কেমন এবং পণ্যটির গুণগত মান কেমন এবং যাতে ক্রেতার প্রবলেম সলভ

করে এবং এতে করে গ্রাহক পণ্যটি কিনতে আগ্রহী হবে।

* পন্যের ছবি


ডিজিটাল মার্কেটপ্লেসে পণ্য হাতে দেখে ভালো মন্দ যাচাই করার অপশন নাই । ছবি দেখেই গ্রাহক পণ্য কিনতে

আগ্রহী হবে। এজন্য পণ্যের ছবি হতে হবে স্পষ্ট যাতে করে গ্রাহক পণ্যটি সম্পর্কে ছবি দেখে একটা

ধারণা পেতে পারে এবং ছবিগুলো বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে স্পষ্ট করে তুলতে হবে । তারপর ছবি পোস্ট

করতে হবে

* পণ্যের ভিডিও

পণ্যকে গ্রাহকের নিকট উপস্থাপন করার জন্য ভিডিও তৈরি করতে হবে। ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে
খেয়াল রাখতে হবে ভিডিওর কোয়ালিটি এবং সাউন্ড কোয়ালিটি স্পষ্ট কিনা আপনি


নিজেকে প্রশ্ন করুন ? আপনি যখন কোন ভিডিও দেখেন ভিডিওর কোয়ালিটি বা সাউন্ড কোয়ালিটি যদি

সঠিকভাবে দেখা না যায় তাহলে কি আপনি ওই ভিডিওটা দেখেন, তেমনি আপনার পণ্যের ভিডিও যদি ঝাপসা

হয় সাউন্ড কোয়ালিটি যদি বাজে হয় তবে ক্রেতা বিরক্ত রোধ করবে । ভিডিও কোয়ালিটি সুন্দর রাখা অতিব

জরুরী ।

* পণ্যের পরিচিতি ও প্রচারণা


আপনি পণ্য সিলেকশন করেছেন, পন্য সংগ্রহ করেছেন, ডিজিটাল দোকান ( ফেসবুক

পেজ, গ্রুপ, ওয়েবসাইট ) তৈরি করেছেন । এখন পন্যের পরিচিতি ও বিক্রয় করার পর্ব।

* নিজের পরিচিতদের নিকট


নিজের পরিচিত মানুষ আত্মীয়স্বজন ,বন্ধু-বান্ধব তাদেরকে জানান যে আপনি অনলাইনে ব্যবসা শুরু করেছেন

এবং আমার নিকট পন্য আছে। আপনারা আমার পণ্যটি কেনার জন্য ফেসবুক পেইজে অর্ডার করবেন অথবা

ওয়েব সাইটে অর্ডার করবেন এবং আপনার আশেপাশে যারা থাকে তাদেরকে বলুন আপনার ব্যবসার কথা।

* বিজ্ঞাপন কার্যক্রম


কোন প্রতিষ্ঠানের পণ্যের প্রচারের জন্য । ফেসবুক অ্যাড রান করার মাধ্যমে আপনার পণ্যকে নির্দিষ্ট ব্যক্তি ও

এলাকায় বিজ্ঞাপন পরিচালনা করতে পারবেন। গুগল এড রান করার মাধ্যমেও পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করানো

যায়। এতে করে ফেসবুক এবং গুগলকে অর্থ পেমেন্ট করতে হয়।

* এসইও

এসইও ( সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন ) করার মাধ্যমে, আপনার ওয়েবসাইটকে গুগলে রান করতে পারবেন ।

গুগলের প্রথম পেজে যে সমস্ত ওয়েবসাইটগুলো শো করে সে সমস্ত ওয়েবসাইটে মানুষ বেশি ক্লিক করে

আপনি ইচ্ছা করলে আপনার ওয়েবসাইট রেংক করানোর জন্য নিজে এসইও শিখতে পারেন। অথবা অর্থ পে

করার মাধ্যমে এসইও এক্সপার্ট হায়ার করতে পারেন।

* পন্যের অর্ডার নিশ্চিতকরণ


মনে রাখবেন কাস্টমার ব্যবসার প্রাণ। আপনি পণ্য উৎপাদন করেছেন যদি গ্রাহক না ক্রয় না

করে তাহলে পণ্য কার কাছে বিক্রি করবেন ।এজন্য পণ্য গ্রাহক অর্ডার করলে আপনি গুরুত্বের সাথে গুণগত

মানের পণ্য কুরিয়ারের মাধ্যমে যত্নের সহিত কাস্টোমারের নিকট পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন এবং

কাস্টমারের মতামত নিবেন। পন্যের মান কেমন ও সার্ভিস কেমন ইত্যাদি ইত্যাদি

* লয়েল কাস্টমার


আপনার পণ্য যারা ক্রয় করেছে তারা আপনার লয়েল কাস্টমার। পরবর্তীতে আপনার পণ্য

পুনরায় তাদের নিকট বিক্রয় করার জন্য, তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন । তাদের মোবাইল নাম্বার, ইমেইল

ইত্যাদি ,ডায়েরিতে সংরক্ষন করুন। নতুন কোন পন্য আপনি বিক্রি করলে তাদেরকে অবগত করতে পারবেন।


পরিশেষে , আপনি যদি সত্যিই একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চান। আপনাকে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে
হবে, ধৈর্য ধরতে হবে, লেগে থাকতে হবে, সমসাময়িক জ্ঞান অর্জন করতে হবে, তবেই একজন সফল ব্যবসায়ী
হতে পারবেন।
















Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url